ফ্রিল্যান্সিং পেশা নিয়ে ছেলেদের জন্য একটি নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করার চেষ্টা করছি। বিস্তারিত জানার জন্য পুরো লেখাটি পড়ুন।
বর্তমান সময়ে “ফ্রিল্যান্সিং” একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পেশায় রূপ নিয়েছে, এবং এটি শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও সমানভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রযুক্তির উন্নতি এবং ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে এই পেশা অনেকের জন্যই খুব সহজ এবং আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। কয়েক বছর আগেও যা ছিল কল্পনার বাইরে, এখন তা বাস্তবতা।
ফ্রিল্যান্সিং পেশাটি নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই উপযুক্ত, তবে ছেলেদের জন্য বিশেষভাবে কার্যকর হতে পারে। কারণ, পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার সময় থেকেই একজন ছেলের জন্য উপার্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের প্রচলিত চাকরির বাজার অনেক সময় প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, যার ফলে অনেক ছেলেকে বেকারত্বের শিকার হতে হয়।
বেকার ছেলেরা অনেক সময় সমাজ এবং পরিবারের কাছ থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয়, যা তাদের মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে একটি কার্যকর সমাধান, কারণ এটি ঘরে বসেই করা যায় এবং নিজের দক্ষতা অনুযায়ী আয় করা সম্ভব। এটি চাকরি সংকটের সময়ে বিকল্প উপার্জনের একটি ভালো উপায়, যা বেকারত্বের চাপ থেকে মুক্তি দিতে পারে।
এ পেশায় সফল হতে হলে ধৈর্য, কঠোর পরিশ্রম এবং সঠিক গাইডলাইন অনুসরণ করা প্রয়োজন।
ছেলেদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং গুরুত্বপূর্ণ কেন
আয়ের সুযোগ:
ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ছেলেরা নিজের খরচ চালানোর মতো অর্থ উপার্জন করতে পারে। এটি তাদের পারিবারিক নির্ভরশীলতা কমাতে সাহায্য করে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। আর্থিক স্বাধীনতা ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় ও বিনিয়োগের সুযোগও তৈরি করে।
- তাদের নিজস্ব খরচ বহন করতে এবং আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে ফ্রিল্যান্সিং থেকে অর্জিত অর্থ ব্যবহার করতে পারে।
- এটি তাদের পরিবারের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে সাহায্য করে এবং তাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে।
দক্ষতা বৃদ্ধি:
ফ্রিল্যান্সিং বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ এনে দেয়, যেমন: ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন, লেখালেখি ইত্যাদি। এই দক্ষতাগুলো ভবিষ্যতে তাদের পেশাগত জীবনে কাজে লাগবে এবং প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে বাড়তি সুবিধা দেবে।
- ফ্রিল্যান্সিং বিভিন্ন ধরণের কাজের অভিজ্ঞতা প্রদান করে যা তাদের লেখাপড়ার সাথে সম্পর্কিত হতে পারে অথবা নাও হতে পারে।
- তারা নতুন দক্ষতা শিখতে পারে, যেমন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন, লেখা, অনুবাদ, এবং আরও অনেক কিছু।
- এই দক্ষতাগুলো তাদের ভবিষ্যতের কর্মজীবনে সুবিধা প্রদান করবে।
অভিজ্ঞতা অর্জন:
ফ্রিল্যান্সিং ছেলেদের বাস্তব জীবনের প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ দেয়, যা তাদের পেশাদার জগতের সঙ্গে পরিচিত করে। কাজের সময়সীমা মেনে চলা, ক্লায়েন্টের চাহিদা বুঝে কাজ করা ইত্যাদি দক্ষতা তাদের পেশাদারিত্বকে শাণিত করে।
- ফ্রিল্যান্সিং ছাত্র-ছাত্রীদের পেশাদার জগতের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
- তারা বাস্তব জীবনের প্রকল্পে কাজ করার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন করে এবং তাদের দক্ষতা প্রয়োগ করে।
- এটি তাদের সময়সীমা মেনে চলতে, ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ করতে এবং পেশাদারভাবে কাজ করতে শেখায়।
পেশাগত নেটওয়ার্ক তৈরি:
ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ছেলেরা বিভিন্ন দেশের পেশাদারদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করতে পারে। এই নেটওয়ার্ক ভবিষ্যতে নতুন কাজের সুযোগ এনে দিতে পারে এবং পেশাগতভাবে সমৃদ্ধ হতে সহায়তা করে।
- ফ্রিল্যান্সিং বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন পেশাদারদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে।
- তারা তাদের কাজের মাধ্যমে অন্যদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে এবং তাদের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত করতে পারে।
- ভবিষ্যতে তাদের কর্মজীবনের জন্য এটি মূল্যবান হতে পারে।
স্বনির্ভরতা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি:
ফ্রিল্যান্সিং ছেলেদের নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে এবং দায়িত্বশীল হতে শেখায়। সময়সূচী ঠিক রাখা এবং কাজের মান বজায় রাখা তাদের আত্মবিশ্বাস ও স্বাধীনতা বাড়ায়।
- ফ্রিল্যান্সিং নিজেদের উপর নির্ভর করতে এবং তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিতে শেখায়।
- তারা তাদের কাজের জন্য দায়ী হয় এবং তাদের সময়সূচী পরিচালনা করতে শেখে।
- এটি তাদের আত্মবিশ্বাস এবং স্বাধীনতা বৃদ্ধি করে।
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার কেমন?
বেকারত্ব বাংলাদেশের একটি বড় সমস্য। দিন দিন বাংলাদেশের শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা বাড়লেও কর্মক্ষেত্র সেভাবে বাড়ছে না। যার কারণে বেকারত্বের এই সমস্যা থেকেই যাচ্ছে এবং এই সমস্যার প্রধান ভুক্তভোগী হচ্ছে তরুণরা। যার কারণে আমাদের দেশের উন্নয়ন এর অগ্রযাত্রার প্রধান বাধা হয়ে সামনে দাঁড়াচ্ছে এই বেকারত্বন।
ফ্রিল্যান্সিং করার সুবিধা
ফ্রিল্যান্সিং আপনাকে আপনার সময়সূচীর উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবং আপনি যখন চান তখন কাজ করতে পারবেন। এটি বিশেষভাবে কার্যকর হতে পারে যদি আপনার অন্যান্য প্রতিশ্রুতি যেমন পরিবার বা শিক্ষা থাকে, কারণ আপনি আপনার সময়সূচীর সাথে কাজ করতে পারেন।একজন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে, আপনি আপনার নিজের বস এবং আপনি যে কাজগুলি করেন এবং আপনি যে প্রকল্পগুলিতে কাজ করেন তার উপর আপনার আরও নিয়ন্ত্রণ থাকে। এটি আপনাকে আরও সৃজনশীল হতে এবং আপনার আগ্রহের প্রকল্পগুলিতে কাজ করার অনুমতি দিতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং কি চাকরির চেয়ে ভালো?
সমগ্র পৃথিবী এখন কনটিনিয়াসলি ডিজিটালাইজড হচ্ছে। যদি খেয়াল করেন তো দেখতে পাবেন, কোভিডের প্যানডামিক সময়ে যখন হাজার হাজার কোম্পানি থেকে লাখ লাখ কর্মী ছাটাই করা হয়েছে তখন কোন ফ্রিল্যান্সারকেই কিন্তু বসে থাকতে হয় নি, প্রথম ১ মাসে তাদের ইনকাম কিছুটা কমলেও পরবর্তীতে তা বেড়েই চলেছে। তাছাড়া বাংলাদেশে ফেসবুক থেকে এফ-কমার্সের মাধ্যমে অনেক বেকার তাদের কর্মসংস্থান করতে সফল হয়েছেন।
উপসংহার
ফ্রিল্যান্সিং বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি দুর্দান্ত ক্যারিয়ার পছন্দ হতে পারে। কঠোর পরিশ্রম এবং উত্সর্গের সাথে, একটি ভাল জীবিকা অর্জন করা এবং একটি নমনীয় কাজের সময়সূচী থাকা সম্ভব।
নিয়মিত ব্লগ পোস্ট পড়তে আমাদের ব্লগটি ভিজিট করুন। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতে আমাদেরকে ফেসবুকে ফলো করতে পারেন আমাদের স্টাডিটেক ফেসবুক পেজ

আমার প্রফাইলে স্বাগতম, আমি আরিফুল ইসলাম, StudyTech-এর CEO এবং Founder। আমি ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, SEO, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজ এবং ফ্রিল্যান্সিং করছি প্রায় ১০ বছর ধরে এবং এই বিষয়গুলো নিয়ে নিয়মিত ব্লগ লেখার চেষ্টা করি নিজের নলেজ অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে, যাতে সবাই উপকৃত হয়।
আমি ফ্রিল্যান্সিং এর পাশাপাশি আমার নিজস্ব মার্কেটিং এজেন্সির মাধ্যমে আইটি রিলেটেড সাপোর্ট দিয়ে থাকি, যেমনঃ ওয়েবসাইট বানানো, ওয়েবসাইতের জন্য এসইও করা, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ভিডিও এডস তরি, গুগল এবং ফেসবুক এডস বুস্ট সার্ভিস দিয়ে থাকি। এবং আমি একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারও পরিচালনা করি, যেখানে নতুনদের ডিজিটাল স্কিল এবং ফ্রিল্যান্সিং শেখাই।
আমার সাথে কানেক্ট হতে পারেন সোশ্যাল মিডিয়াতে:
🔗 ওয়েবসাইট: arifulislam.com.bd
🔗 লিংকডইন: linkedin.com/in/arifinfo
🔗 ফেসবুক: facebook.com/ariful.info