বাংলাদেশে কত মানুষ ফ্রিল্যান্সিং করে?

বাংলাদেশে কত মানুষ ফ্রিল্যান্সিং করে?

বাংলাদেশে কত মানুষ ফ্রিল্যান্সিং করে? এই প্রশ্নের উওর হচ্ছে, অনুমান করা হয় যে, প্রায় ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার বাংলাদেশে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে, যারা বৈশ্বিক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে অবদান রাখছেন।

সম্প্রতি সিইও ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যেখানে ফ্রিল্যান্সার নিয়োগে শীর্ষ ৩০ দেশের তালিকা তুলে ধরা হয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র তালিকার শীর্ষে রয়েছে, বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে ২৯তম স্থানে রাখা হয়েছে। বৈশ্বিকভাবে প্রায় ১৫৭ কোটি মানুষ ফ্রিল্যান্সিং পেশায় নিযুক্ত রয়েছে, যা এই খাতের ব্যাপক প্রসারের একটি চিত্র তুলে ধরে।

বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি-র চেয়ারম্যান তানজিবা রহমানের মতে, বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে ১৫৩টি আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসে কাজ করা হচ্ছে। অনুমান করা হয় যে, প্রায় ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার বাংলাদেশে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে, যারা বৈশ্বিক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে অবদান রাখছেন।

বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং এর প্রভাব

বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং কর্মসংস্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে উঠেছে। ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ এবং ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে অল্প প্রশিক্ষণ নিয়ে যে কেউ ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করতে পারে, যা লক্ষ লক্ষ মানুষকে আয়ের সুযোগ করে দিচ্ছে। বর্তমানে, বাংলাদেশে প্রায় ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে কাজ করে বছরে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা) আয় করছে।

এই আয় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ফ্রিল্যান্সারদের আয় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে সহায়তা করে এবং দেশের বেকারত্ব সমস্যার সমাধানে একটি কার্যকর উপায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় ক্যারিয়ার হিসেবে দেখা দিয়েছে, কারণ এটি স্থিতিশীল আয়ের পাশাপাশি স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেয়।

ফ্রিল্যান্সিং ও বাংলাদেশের অর্থনীতি

একটি গবেষণা অনুযায়ী, অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট (ওআইআই) জানিয়েছে, বাংলাদেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ফ্রিল্যান্সিং সেবা প্রদানকারী দেশ, যা বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৬% ফ্রিল্যান্সিং সেবা প্রদান করে। প্রথম স্থানে রয়েছে ভারত, যা প্রায় ২০% সেবা প্রদান করছে।

বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং সেবার চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে এবং ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতা ও দক্ষতায় এই সেক্টর আরও বিস্তৃত হচ্ছে। প্রায় ১৬০০ ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ বাংলাদেশ থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে, যার মধ্যে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং ও এনিমেশন, ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও), এবং ট্র্যাক্স ফাইল প্রস্তুতির মতো কাজগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয়।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুবিধা এবং ভবিষ্যত

বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং খাতটি শুধুমাত্র অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি দেশের তরুণ প্রজন্মকে নতুন দক্ষতা শেখার সুযোগ দিচ্ছে। এ খাতে প্রশিক্ষণ, সঠিক দিকনির্দেশনা এবং উদ্যোক্তামূলক চিন্তাধারা থাকলে বাংলাদেশ বৈশ্বিক ফ্রিল্যান্সিং হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে পারে।

বাংলাদেশের তরুণরা যদি ধারাবাহিকভাবে তাদের দক্ষতা উন্নত করতে পারে এবং এই সেক্টরে আরও নতুন উদ্ভাবন আনতে পারে, তবে এটি দেশকে আরও উন্নত ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যেতে পারবে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে বেকারত্ব হ্রাস এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বড় ভূমিকা রাখা সম্ভব।

উপসংহার

বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং খাত একটি ক্রমবর্ধমান ক্ষেত্র এবং এটি দেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তরুণরা যদি সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ এবং গাইডেন্স পায়, তবে তারা ফ্রিল্যান্সিংকে আরও বিস্তৃতভাবে গ্রহণ করতে পারবে এবং এর মাধ্যমে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে।

আমরা, স্টাডিটেক এর পক্ষ থেকে নিয়মিত নতুনদের জন্য বিশেষ ফ্রিল্যান্সিং কোর্স পরিচালনা করি। যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ে আগ্রহী হয়ে থাকেন এবং এই ক্ষেত্রের দক্ষতা অর্জন করতে চান, তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আমাদের কোর্সগুলো আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং জগতে সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।

যদি আপনার আরও বিস্তারিত কিছু জানার দরকার থাকে, সেক্ষেত্রে স্টাডিটেক ফেসবুক পেজ অথবা ওয়েব সাইটের ব্লগ এ গিয়ে ফ্রিল্যান্সিং সংক্রান্ত আরও অনেক বিষয় জানাতে পারেন।

ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *